বাংলাদেশের জন্য উপযোগী অর্থব্যবস্থা কোনটি?
অথবা, বাংলাদেশের জন্য উপযুক্ত অর্থব্যবস্থা কোনটি?
অথবা, বাংলাদেশের উপযোগী অর্থব্যবস্থা ব্যাখ্যা কর।
উত্তর৷ ভূমিকা : আধুনিক যুগে প্রতিটি রাষ্ট্রই তার অর্থনৈতিক ব্যবস্থার কাঠামোসহ পুরো ব্যবস্থার উপর খুবই গুরুত্বারোপ করে থাকে । কেননা অর্থনীতিই একটি রাষ্ট্রের মূল চালিকাশক্তি। অর্থনৈতিক ব্যবস্থার ক্ষেত্রে বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যে পার্থক্য পরিলক্ষিত হলেও পুঁজিবাদী ও সমাজতন্ত্রবাদী অর্থব্যবস্থাই বিশ্বে সবচেয়ে বেশি প্রচলিত। তবে পুঁজিবাদ ও সমাজতন্ত্রবাদ সম্পূর্ণ বিপরীতধর্মী দুটি রাষ্ট্রীয় ও অর্থনৈতিক সমাজব্যবস্থা, বিভিন্ন দিক থেকে এদের মধ্যে পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়।
বাংলাদেশের জন্য উপযোগী অর্থব্যবস্থা : উন্নত রাষ্ট্রগুলোর অর্থনৈতিক ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক উন্নয়নে সেসব দেশের বহু বছর সময় লেগেছে। কিন্তু বাংলাদেশের ন্যায় উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঐ পদ্ধতিতে সম্ভব নয়। বাংলাদেশের সম্পদ সীমিত। আর সীমিত সম্পদের পূর্ণ সদ্ব্যবহার করার লক্ষ্যে এ দেশে মিশ্র অর্থনীতিই একমাত্র উপযুক্ত ব্যবস্থা। কারণ, এ অর্থব্যবস্থায় সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগ ও সহাবস্থানের মাধ্যমে দেশের দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব । এ অর্থব্যবস্থার আরেকটি বড় সুবিধা হলো এখানে উৎপাদন, বণ্টন, ভোগ প্রভৃতি অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধানের জন্য একদিকে যেমন ধনতান্ত্রিক ব্যবস্থার ন্যায় স্বয়ংক্রিয় মূল্যব্যবস্থার উপর নির্ভর করতে হয় না। অপরদিকে, তেমনি সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার ন্যায় ব্যক্তি উদ্যোগের স্বাধীনতা সম্পূর্ণরূপে খর্ব করা হয় না।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, পুঁজিবাদ ও সমাজতন্ত্রবাদ দুটি বিপরীতধর্মী অর্থব্যবস্থা। এ দু’ধরনের অর্থব্যবস্থার মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য পরিলক্ষিত হলেও এ দুটি অর্থব্যবস্থা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গুরুত্বসহকারে মর্যাদা পেয়েছে। দেশের রাজনৈতিক, সামাজিক প্রভৃতি প্রেক্ষাপটের উপর ভিত্তি করে সে দেশের উপযোগী অর্থব্যবস্থা গড়ে উঠে । কিন্তু বাংলাদেশের ন্যায় উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে এ দুই অর্থব্যবস্থাকে পাশ কাটিয়ে মিশ্র অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গুরুত্ব সহকারে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।