তর্ক সংগ্রহ অনুসারে কারণ কত প্রকার ও কী কী?
অথবা, ন্যায় কার্যকারণতত্ত্বের প্রকারভেদ দেখাও।
অথবা, ন্যায়দর্শনের কার্যকারণের শ্রেণিবিভাগ দেখাও ।
অথবা, ন্যায়দর্শনে কারণকে কয় ভাগে ভাগ করা হয়েছে?
অথবা, ন্যায় কার্যকারণতত্ত্বে কারণের শ্রেণিবিভাগ দেখাও।
উত্তর৷ ভূমিকা : ভারতীয় দর্শনের আস্তিক স্কুলসমূহের মধ্যে বস্তুবাদী দর্শন হিসেবে ন্যায়দর্শন স্বাধীন চিন্তা ও বিচারের উপর প্রতিষ্ঠিত এবং এ দর্শনের প্রতিষ্ঠাতা হলেন মহর্ষি গৌতম। ন্যায়দর্শনের মূলভিত্তি হলো ‘ন্যায়সূত্র’। ন্যায়দর্শন যুক্তির উপর প্রতিষ্ঠিত এবং বস্তুর জ্ঞান নিরপেক্ষ স্বাধীন সত্তায় বিশ্বাসী। ন্যায়দর্শনকে নামান্তরে তর্কশাস্ত্র, প্রমাণশাস্ত্র, হেতুবিদ্যা, বাদবিদ্যা এবং আন্বীক্ষিকী বিদ্যা বলা হয়। ন্যায়দর্শনের অন্যতম প্রধান আলোচ্যবিষয় হলো কারণতত্ত্ব, যা নিম্নে আলোচনা করা হলো :
কারণের শ্রেণিবিভাগ : নৈয়ায়িকদের মতে, কারণ হলো কার্যের অব্যবহিত, শর্তহীন, অপরিবর্তনীয়, পূর্ববর্তী ঘটনা ( A cause is immediate, unconditional, invariable antecedent to the effect.)। অন্নম ভট্ট বলেন, ‘অসাধারণং কারণং করণম্’। অর্থাৎ কার্যের উৎপত্তিতে যে কারণটি অসাধারণ বা সাধকতম হয় তাকেই কারণ বলা হয়। ন্যায়দর্শন অনুসারে বিশেষ করে অনুম ভট্ট-এর মতে, কারণ তিন প্রকার। যথা :
১. সমবায়ী কারণ; ২. অসমবায়ী কারণ এবং ৩. নিমিত্ত কারণ।
নিমিত্ত কারণ দু’প্রকার। যথা : ক. সাধারণ নিমিত্ত কারণ এবং খ. অসাধারণ নিমিত্ত কারণ ।
উপসংহার : পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে, ন্যায়দর্শন কারণতত্ত্ব সম্পর্কে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেছেন। তাঁদের কারণতত্ত্বের সঙ্গে পাশ্চাত্য দর্শনিক মিল-এর সংগতি লক্ষ্য করা যায়। ‘কারণ হলো সদর্থক ও নঞর্থক শর্তের সমষ্টি’-মিলের এ মতের সঙ্গে ন্যায়দর্শনের কারণতত্ত্বের গুরুত্বপূর্ণ সাদৃশ্য রয়েছে।