• March 28, 2023

তমদ্দুন মজলিশ কী?

অথবা, তমদ্দুন মজলিশ সম্পর্কে যা জান লিখ।
উত্তর৷ ভূমিকা :
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে তমদ্দুন মজলিশ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা নির্ধারণের ক্ষেত্রে এবং আরো কতকগুলো ব্যাপারে তাদের প্রত্যয় ও অবস্থান ছিল গণমুখী। নিচে তমদ্দুন মজলিশ সম্পর্কে বর্ণনা করা হলো :
তমদ্দুন মজলিশ : তমদ্দুন মজলিশ ইসলামি আদর্শাশ্রয়ী একটি সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। ভারত বিভাগের অব্যবহিতপরেই ঢাকায় গড়ে উঠে এ সংগঠনটি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আবুল কাশেমের উদ্যোগে ১৯৪৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ভাষা আন্দোলনের প্রথম পর্বে তমদ্দুন মজলিশের ভূমিকা ছিল অতীব গুরুত্বপূর্ণ । উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার উদ্যোগের বিরুদ্ধে বস্তুত তমদ্দুন মজলিশই প্রথম প্রতিবাদ উত্থাপন করে এবং বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিসহ ভাষা আন্দোলনের সূচনার পথিকৃতের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। তমদ্দুন মজলিশ ১৯৪৭ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা বাংলা না উর্দু শিরোনামে অধ্যাপক আবুল কাশেম সম্পাদিত একটি পুস্তিকা প্রকাশ করে। ঐতিহাসিক পুস্তিকায় সন্নিবেশিত নিবন্ধগুলোতে এদের লেখক কাজী অফিস মোতাহার হোসেন, আবুল মনসুর আহমদ ও অধ্যাপক আবুল কাশেম বাংলাকে পূর্ব বাংলায় শিক্ষার একমাত্র মাধ্যম, ও আদালতের ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার পক্ষে জোরালো বক্তব্য রাখেন। তারা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিও তুলে ধরেন। তারা প্রস্তাব দেন-
ক. বাংলা ভাষাই হবে পূর্ব পাকিস্তানের শিক্ষার বাহন।
খ. পূর্ব পাকিস্তানের আদালতের ভাষা।
গ. পূর্ব পাকিস্তানের অফিসের ভাষা।
ঘ. পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের দাপ্তরিক ভাষা হবে দুটি-বাংলা ও উর্দু। বাংলা ভাষা বিরোধী নীতির বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রতিরোধ সৃষ্টির লক্ষ্যে তমদ্দুন মজলিশের নেতৃত্বে ১৯৪৮ সালের ২ মার্চ প্রথম রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। ১৯৪৮ সালের ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলে তমদ্দুন মজলিশ কর্মী এবং অন্যান্য সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক কর্মীদের যৌথ সভায় মজলিশ কর্মী শামসুল আলমকে আহ্বায়ক করে
সর্বদলীয় কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রভাষা কর্ম পরিষদ নামে একটি নতুন কমিটি গঠিত হয়। এ তমদ্দুন মজলিশ অত্যন্ত সফলভাবে দীর্ঘ পাঁচ বছর ভাষা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, বাংলা ভাষা আন্দোলনে তমদ্দুন মজলিশের অবস্থান ছিল পূর্ব বাংলার জনসাধারণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন। ভাষা আন্দোলনে তমদ্দুন মজলিশের পথিকৃতের ভূমিকা এ সংগঠনের জন্য এনে দিয়েছে উদ্যম ও মুক্তিযুদ্ধের বিশিষ্ট জনগোষ্ঠীর সমর্থন। ভাষা আন্দোলনের সময় তমদ্দুন মজলিশের ব্যাপক তৎপরতা লক্ষ করা যায়।

পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!