General Knowledge

জৈন পরমাণুবাদ কী? সংক্ষেপে লিখ।

অথবা, জৈন পরমাণুবাদ সম্পর্কে সংক্ষেপে লিখ।
অথবা, জৈন পরমাণুবাদ বলতে কী বুঝ?
অথবা, জৈন পরমাণুবাদ কী?
উত্তর৷ ভূমিকা :
দর্শনের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, জৈন দর্শন একটি প্রাচীন দর্শন। জৈনরা দর্শনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেছেন তার মধ্যে অন্যতম হলো দ্রব্য। তারা বস্তুবাদ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে দ্রব্য
সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। তারা দ্রব্য সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে যে পরমাণুবাদ প্রতিষ্ঠা করেন তা নিম্নে আলোচনা করা হলো :
জৈন পরমাণুবাদ : জৈন মতে, জড়ের অপর নাম পুদগল। বুৎপত্তিগত অর্থে যা পূর্ণাঙ্গ হয় এবং গলে যায় তাই পুদগল। জড় বা পুদগলের চারটি গুণ আছে যথা : রূপ, রস, গন্ধ ও স্পর্শ। জৈন মতে, যে কোন জড় দ্রব্যকে ভাঙা যায় এবং ভাঙতে ভাঙতে এমন একটি স্তরে পৌছায় যাকে আর ভাঙা যায় না। এ অবিভাজ্য ক্ষুদ্রতম জিনিসের নাম পরমাণু। পরমাণুগুলোর কোন অংশ নেই। এরা মৌলিক ও নিত্য এদের উৎপত্তি নেই বিনাশও নেই। পরমাণুগুলো সংখ্যায় অনেক। তবে এদের মধ্যে কোন গুণগত পার্থক্য নেই। সব পরমাণুর মধ্যে একই রকমের গুণ বিদ্যমান। এ পরমাণুই জড় জগতের মৌলিক উপাদান । পরমাণুগুলো সক্রিয় ফলে এরা পরস্পরকে যেমন আকর্ষণ করতে পারে তেমনি পরস্পর হতে বিচ্ছিন্নও হতে পারে। বিভিন্ন পরমাণুর সংমিশ্রণের ফলে বিভিন্ন আকারের যৌগিক দ্রব্যের সৃষ্টি হয়েছে। মানুষের দেহ, মন, প্রাণ, বাক্ ও নিঃশ্বাস প্রশ্বাস এসবই জড়ের দ্বারা সৃষ্ট। জৈন মতে, দুই বা ততোধিক পরমাণুর সংযোগে যে জড় দ্রব্যের সৃষ্টি হয় তাকে সংঘাত বলে। যেমন- ক্ষিতি, অপ, তেজ ও মরুত এসবই সংঘাত। জৈন মতে, সংঘাত ও রূপ, রস, গন্ধ ও স্পর্শ এ চার গুণবিশিষ্ট। এ বিশাল বিশ্ব বিভিন্ন সংঘাতের দ্বারা সৃষ্ট।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, জৈনরা ভারতীয় দর্শনের ইতিহাসে যে পরমাণুবাদ প্রতিষ্ঠা করেছেন তার দ্বারা ভারতীয় অন্যান্য দার্শনিক সম্প্রদায় প্রভাবিত হয়ে ছিলেন। জৈনদের এ পরমাণুবাদ গ্রিক ও ভারতীয় অন্যান্য পরমাণুবাদ থেকে স্বতন্ত্র্য মতবাদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!