জেন্ডার পরিপ্রেক্ষিতে সুশাসন ব্যবস্থা আলোচনা কর ।

অথবা,জেন্ডার প্রেক্ষিতে সুশাসন ব্যবস্থার বিবরণ দাও।
অথবা, জেন্ডারের প্রেক্ষাপটে সুশাসন ব্যবস্থা আলোচনা কর।
জেন্ডারের প্রেক্ষাপটে সুশাসন ব্যবস্থা পর্যালোচনা কর।
অথবা’জেন্ডারের প্রেক্ষাপটে সুশাসন ব্যবস্থা বর্ণনা দাও।
অথবা, জেন্ডারের প্রেক্ষিতে সুশাসন ব্যবস্থা তুলে ধর।
উত্তর৷ ভূমিকা :
বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকাসহ গোটা দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে নারী বিস্ময়কর উত্থান ঘটেছে সত্য। কিন্তু বাহ্যিক দিক থেকে এ উত্থান ঘটলেও পরিসংখ্যান কিন্তু ভিন্ন সত্যকেই প্রকাশ করে। শাসন প্রক্রিয়ার সর্বস্তরে নারীদের অতি নগণ্য উপস্থিতি দেখা যায়। এটি রাষ্ট্রপ্রধানের মতো শীর্ষপদে নারীদের আসীন হওয়ার গৌরবকে ম্লান করে দেয়। এ অঞ্চলের সংখ্যাগরিষ্ঠ নারী নিরক্ষর এবং রুগ্ন স্বাস্থ্যের অধিকারী। জাতীয় হিসাবরক্ষণ ব্যবস্থার কাছে তারা মূলত অদৃশ্য। বস্তুত দক্ষিণ এশিয়ার নারীর জীবনের সকল ক্ষেত্রে আইনগত, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক বঞ্চনার শিকার। গভর্নেন্স কাঠামোতেও তাদের অংশগ্রহণের হার সর্বনিম্ন। নারীরা জনসংখ্যার অর্ধেক হওয়া সত্ত্বেও গভর্নেন্স বা শাসন প্রক্রিয়ার সকল প্রতিষ্ঠানে নারীরা প্রায় অদৃশ্য। নারীরা এ অঞ্চলের রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষে থাকলেও অধিকাংশ নারীর জীবনে কোন সুফল বয়ে আনেনি।
জেন্ডার প্রেক্ষিতে সুশাসন ব্যবস্থা : ভারত ও বাংলাদেশে অন্যান্য সরকার কাঠামোর চেয়ে স্থানীয় সরকারে বিপুলসংখ্যক নারীর উজ্জ্বল উপস্থিতি নজর কাড়ে। কিন্তু তবুও সামগ্রিক বিচারে এ অঞ্চলে সরকারের সর্বস্তরে জেন্ডা বৈষম্যের সর্বগ্রাসী বিস্তার লক্ষণীয়, যা এখানকার নারী সংকটের অন্যতম কারণরূপে বিবেচিত হতে পারে। নিম্নে সুশাসন ব্যবস্থাকে জেন্ডারের প্রেক্ষিতে আলোচনা করা হলো :
১. সরকার কাঠামোতে নারী : বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ায় ঐতিহ্যগতভাবে নীতিনির্ধারণ বা সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিষয়টি পুরুষদের একচেটিয়া বলে বিবেচিত। এক্ষেত্রে তারা বিভিন্ন ধরনের প্রচলিত প্রথা রীতিনীতিকে হাতিয়ারস্বরূপ ব্যবহার করে। নারীরা আজ প্রশাসনের বড় বড় পদে আসীন হচ্ছে। এখানেও নারীদেরকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ার বাইরে রাখা হয়। অবশ্য বিগত কয়েক দশকে নারীদের মর্যাদা অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষত শহরে মধ্যবিত্ত শ্রেণির নারীরা সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে কিছুটা স্বাধীনতা ভোগ করছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও অধিকাংশ নারীর কাছে এ ধরনের স্বাধীনতা এখনো স্বপ্নের মতোই মনে হয়।
২. জাতীয় সংসদ : দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর আইনসভাতে নারীর অংশগ্রহণের অনুপাত খুবই সামান্য। এ অঞ্চলের সংসদে নারীর অংশগ্রহণের হার মাত্র সাত শতাংশ, যা আরব বিশ্ব ছাড়া বিশ্বে সর্বনিম্ন মধ্যপ্রাচ্যের আরব দেশগুলোতে সংসদে নারীর অনুপাত দক্ষিণ এশিয়ার চেয়ে কম। এখানকার দেশগুলোর বাস্তবচিত্র এরূপ,
ক. বাংলাদেশ ও নারীর প্রতিনিধিত্ব : বাংলাদেশে একটি নির্দিষ্ট মেয়াদকাল পর্যন্ত জাতীয় সংসদে নারীদের জন্য ১০ ভাগ আসন সংরক্ষণ করা হয়েছিল। এর মেয়াদ শেষ হওয়ায় বর্তমান জোট সরকার মন্ত্রীসহ মহিলাদের ৫০টি আসন সংরক্ষণের জন্য আইন পাস করেছে।
খ. শ্রীলঙ্কা ও নারী প্রতিনিধিত্ব : শ্রীলঙ্কাতে শাসন প্রতিষ্ঠানসমূহে নারী প্রতিনিধিত্বের জন্য কোনো নির্দিষ্ট সাংগঠনিক নিশ্চয়তা প্রদান করা হয়নি। সংবিধানে অবশ্য উল্লেখ আছে, লিঙ্গের ভিত্তিতে কোন বৈষম্য করা যাবে না। সেখানে সংসদে বা স্থানীয় সরকার কাঠামোতে নারীদের জন্য আসন সংরক্ষণ করা হয়নি। তবে ১৯৬০ সালে শ্রীমাভো বন্দরনায়েক
প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ায় শ্রীলঙ্কা বিশ্বের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রীর দেশ হওয়ার গৌরব অর্জন করে। কিন্তু তবুও শ্রীলঙ্কার সংসদে নার ীদের অনুপাত বিশ্বের গড় হারের বেশ নিচে মাত্র ৪.৯%।
গ. পাকিস্তানের রাজনীতিতে নারী : পাকিস্তানের রাজনীতিতেও নারীরা সিনেটে মনোনয়ন লাভের ক্ষেত্রে খুবই বাধার সম্মুখীন হন। আসলে এখানে সংসদে মনোনীত হওয়ার এপ্রোচটি এমনই যে, বিদ্যমান পুরুষতান্ত্রিক মনোভাবের কারণে একজন নারীর পক্ষে এখানে জিতে আসাটা প্রায় অসম্ভব ১৯৭৭ সালে সিনেটের ৬৩ জন সদস্যের মধ্যে ৩ জন ছিলেন নারী, যা এ যাবৎকালের মধ্যে সর্বোচ্চ। ১৯৮৮ সালের নির্বাচনে ২৪ জন নারী জাতীয় সংসদে নির্বাচিত হলেও মাত্র একজন নারী সিনেটে নির্বাচিত হতে সক্ষম হন।
ঘ. নেপালে নারীর প্রতিনিধিত্ব : নেপালে নিম্নমানের সংসদের চেয়ে উচ্চস্তরের সংসদে নারীর সংখ্যা আনুপাতিক হারে বেশি। নেপালের উচ্চপ্তরের সংসদে ৩টি আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত রাখা হলেও অন্যত্র নারী আসন এখনও সংবিধান কর্তৃক সংরক্ষিত হয়নি। তাই দেখা যায়, নেপালের নিম্নস্তরের সংসদে নারীর সংখ্যা ১৯৬০ সালের একজন থেক ১৯৯৯ সালে ১২ জনে উন্নীত হলেও সার্বিকভাবে নারীর প্রতিনিধিত্বের হার খুবই নিম্ন পর্যায়ে রয়ে গেছে।
৩. মন্ত্রিসভায় নারী : দক্ষিণ এশিয়ার মন্ত্রিসভাগুলোতে নারী প্রতিনিধিত্বের হার এখন খুবই নগণ্য। আধুনিককাল এ অঞ্চলে মন্ত্রিসভায় নারীদের অংশগ্রহণের হার ৯ শতাংশ হয়েছে। নারীদের অনুপাত খুবই হতাশাজনক। এদেরক কম বুদ্ধিসম্পন্ন বলে অধিক দায়িত্বপূর্ণ পদে বসানো হয় না। এছাড়া এ অঞ্চলের দেশগুলোর নারী মন্ত্রীদের কখনো উচ্চ
ক্ষমতাসম্পন্ন বলে বিবেচিত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। সমাজকল্যাণ জাতীয় মন্ত্রণালয় সাধারণত নারীদের ভাগ্যে জোটে। যেমন- ১৯৯৯ সালে নেপালের মন্ত্রিসভায় একজনমাত্র নারী প্রতিমন্ত্রী হিসেবে নারী ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েছেন। তার কোন স্বাধীন দপ্তর ছিল না এবং তিনি পূর্ণ মন্ত্রিসভার সভায় অংশগ্রহণের অধিকার লাভ করেননি।
৪. সংসদীয় কমিটিতে নারী : জাতীয় নীতিনির্ধারণের ক্ষেত্রে সংসদীয় কমিটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এ কমিটিতেও নারীর কন্ঠস্বর শোনা যায়। ভারতের লোকসভায় ৩০ এর বেশি সংসদীয় কমিটির অধিকাংশ কমিটিতে নারীর প্রতিনিধিত্ব থাকলেও মাত্র একটি সংসদীয় কমিটির চেয়ারপার্সন নারীকে করা হয়েছে। পাকিস্তানে সাম্প্রতিক সময়ের আগে জাতীয় অর্থনৈতিক সমন্বয় কমিটির মতো স্থায়ী পরিষদ ও কমিটিতে দু’একটি ব্যতিক্রম ছাড়া। কোনো নারী সদস্য ছিল না। বর্তমানে পাকিস্তান সরকার অর্থনৈতিক পরামর্শ বোর্ডসহ বিভিন্ন পরামর্শ কমিটিতে নারীদের
অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে।
৫. স্থানীয় পর্যায়ে নারী প্রতিনিধিত্ব : বাংলাদেশের স্থানীয় পর্যায়ে নারী প্রতিনিধিত্ব খুবই কম। তৃণমূল পর্যায়ের সংগঠন জনসাধারণকে তাদের সমাজের গভর্নেন্সের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার পথ উন্মুক্ত করে দেয়। যেমন- বিভিন্ন দেশের তৃণমূল অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে যে, নারীরা গভর্নেম্বের স্থানীয় কাঠামোতে যুক্ত হওয়ার পর নতু ধরনের সুফল এসেছে। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোতে অবশ্য স্থানীয় সরকারে নারীর অংশগ্রহণের হারের ক্ষেত্রে যথেষ্ট তারতম্য রয়েছে। তবে গুটিকয়েক দেশে স্থানীয় সরকারে নারীদের অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে বেশ অগ্রগতি সাধন করতে পেরেছে।
৬. রাজনৈতিক দলে নারী : বাংলাদেশ, ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ার অধিকাংশ রাজনৈতিক দলগুলোর নারী শাখাপ্রশাখা রয়েছে। তাই দেখা যায়, দলের উচ্চ পর্যায়ে নারীর অংশগ্রহণ ও নীতিনির্ধারণে তাদের ভূমিকা খুবই সামান্য। দেখা গেছে, বিভিন্ন দলের এসব নারী শাখার কাজ হলো ভোটের সময় নারী ভোটারদের ভোট সংগ্রহ করা। তাই তাদের আত্মনিয়ন্ত্রণ ও সিদ্ধান্তগ্রহণের ক্ষমতা নেই, কিংব া ন্যূনতম মাত্রায় থাকলেও তা পার্টির এজেন্ডার দ্বারা প্রভাবিত। মূলধারার রাজনীতিতে নারীর পদচারণার ক্ষেত্রে এ নারী শাখা ছিল প্রাথমিক পদক্ষেপ। তবে এর খুব কমসংখ্যক সদস্য দলের উচ্চ পদে উন্নীত হতে পেরেছে।
৭. নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে নারী : বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো অল্পসংখ্যক নারীকে নির্বাচনে দলের প্রার্থীরূপে মনোনয়ন দিয়ে থাকে। মনোনয়ন সংক্রান্ত নীতিনির্ধারণী কমিটিতেও নারীদের সংখ্যা খুবই অল্প। ১৯৯৮ ও ১৯৯৯ সালের সাধারণ নির্বাচনে ভারতের সকল রাজনৈতিক দল জাতীয় ও রাজ্য পর্যায়ের এক তৃতীয়াংশ সংসদীয় আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত রাখার অঙ্গীকার ঘোষণা করেছিল। কিন্তু বাস্তবে দলগুলো তাদের ঘোষিত উদ্দেশ্য পূরণ করেনি। জাতীয় নির্বাচনে নারীদের মনোনয়ন না দেওয়ার পশ্চাতে রাজনৈতিক দলগুলোর অনীহার কর্তকগুলো কারণ রয়েছে। মূল কারণটি হলো এমন কাউকে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো মনোনয়ন দিতে চায় যার জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। এখানে ধরে নেওয়া হয় যে, প্রবল পুরুষতান্ত্রিক মনোভাবের কারণে অধিকাংশ ভোটার নারী প্রার্থীর চেয়ে পুরুষ প্রার্থীকেই বেশি ভোট দেবে। তাই নারীকে মনোনয়ন হতে বঞ্চিত করা হয়ে থাকে।
৮। ট্রেড ইউনিয়ানে নারী:শ্রমিক সংঘ তার সদস্য শ্রমিকদের দাবিদাওয়া আন্দোলন ও তাদের শোষণের তীব্রতা লাঘব করার প্লাটফরম হিসেবে কাজ করে। শ্রমিক ইউনিয়নগুলোতে নারীর অংশগ্রহণ খুবই সামান্য। মূলত পুরুষ প্রাধান্যশীল শিল্পখাতে অধিকাংশ ট্রেড ইউনিয়ন কাজ করে থাকে। এ অঞ্চলের বিপুলসংখ্যক নারী শ্রমিক গার্মেন্টস, খাদ্ ও কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পের মত নিম্ন মজুরির কলকারখানায় যুক্ত, যেখানে ট্রেড ইউনিয়ন করার কোন অধিকার নেই। তাই অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে বিপুলসংখ্যক নারী শ্রমিক অসংগঠিত অবস্থায় মারাত্মকভাবে শোষিত হলেও শ্রমিক সংঘে আসার সুযোগ পায়নি।
৯. অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় নারী : নারী সাক্ষরতার হার বৃদ্ধি অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাথে সম্পর্কিত। নারী সাক্ষরতার হার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধির সাথে সাথে বিগত দশকগুলোর তুলনায় বর্তমানে অর্থনীতিতে নারীরা সক্রিয়ভাবে বেশিমাত্রায় অংশগ্রহণ করেছে। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে নারী শিক্ষার হার যতটা বৃদ্ধি পেয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে সে মাত্রায় বৃদ্ধি না পাওয়ায় তা অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নারীর গুণগত অংশগ্রহণকে বাধাগ্রস্ত করেছে।এ অঞ্চলের অধিকাংশ নারী শ্রমিক মূলত অপ্রাতিষ্ঠানিক বা অসংগঠিত খাতের সাথে যুক্ত। শিক্ষিত নারীরা আবার স্বাস্থ্যকর্মী বা শিক্ষকতা পেশার দিকে বেশি ঝোঁকে, এ কাজগুলো সাধারণত মেয়েলি কাজ বলে বিবেচিত হয়। রাষ্ট্রীয় ও ব্যক্তিগত উভয় খাতের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার উচ্চ পর্যায়ে নারীর অবস্থান একেবারেই নগণ্য। সুশাসনকে এ ব্যবস্থা অত্যন্ত বাধাগ্রস্ত করছে।
মূল্যায়ন : দক্ষিণ এশিয়ায় সংসদীয় আসনের মাত্র ৭ শতাংশ, মন্ত্রিপরিষদের মাত্র ৯ শতাংশ, বিচার বিভাগের ৬ শতাংশ এবং সিভিল সার্ভিসের মাত্র ৯ শতাংশ নারীদের দখলে। সমাজ, রাজনীতি, অর্থনীতির মত নানা ক্ষেত্রে নারীর এ নগণ্য অংশগ্রহণ গভর্নেন্স কাঠামোতে নারীর অস্তিত্বকে প্রায় অদৃশ্য করে তুলেছে। সাম্প্রতিককালে বিভিন্ন দেশের স্থানীয় সরকারে নারী সংখ্যার উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ঘটলেও মোট আসনের মাত্র ২০ শতাংশ হচ্ছে নারী। এমনকি মূল রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ নেতৃত্বে নারীরা অবস্থান করলেও গভর্নেন্সের সকল স্তরে ভয়াবহ জেন্ডার বৈষম্য বিদ্যমান। কিছু কিছু দেশ বৈষম্য দূরীকরণে তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও কোন দেশেই নারীরা উল্লেখযোগ্য মাত্রায় ক্ষমতা ও নীতিনির্ধারণী কাঠামোতে প্রবেশ করতে পারে নি, যা নারীদের জীবনে অর্থবহ পরিবর্তন আনতে সক্ষম।
উপসংহার : উপরিউক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, সুশাসন কাঠামোর সকল স্তরে নারীর পরিমাণগত ও গুণগত অংশগ্রহণ নারীর ক্ষমতায়নের একটি আবশ্যিক পূর্বশর্ত, যা টেকসই উন্নয়নের পথকে সুগম করে। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারীদেরকে তাই গভর্নেন্সের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পদ্ধতিতে যুক্ত হওয়ার সুযোগ দিতে হবে। এক্ষেত্রে প্রশাসনিক ও নীতিনির্ধারণী উভয় পর্যায়েই নারীকে সংযুক্ত করতে হবে। স্মরণ রাখতে হবে যে, নারী, পুরুষ, সরকার ও সুশীল সমাজ প্রত্যেকের সুষম অংশগ্রহণ সুশাসনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। স্থানীয় ও জাতীয় সরকারের পর্যায়ে গভর্নেন্সের জেন্ডার বিশ্লেষণ সর্বাগ্রে বৈষম্যমূলক প্রতিনিধিত্বের বিষয়টিকে তুলে ধরে। অনেক সময় বলা হয়, স্থানীয় পর্যায়ে সরকারের কার্যক্রমের বিকেন্দ্রীকরণ জেন্ডার বৈষম্যকে দূর করতে সাহায্য করে। কেননা, বিকেন্দ্রীকরণ তৃণমূল মানুষের প্রতিনিধিত্ব বাড়ায়।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%a4%e0%a7%83%e0%a6%a4%e0%a7%80%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a6%be-%e0%a6%85%e0%a6%a7%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%af%e0%a6%bc-%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%9c%e0%a6%a8%e0%a7%80%e0%a6%a4%e0%a6%bf/