ইসলামে বিবাহের ক্ষেত্রে নারীর অধিকার সংক্ষেপে আলোচনা কর।
অথবা, ইসলাম বিবাহে নারীকে কেমন অধিকার দিয়েছে?
অথবা, ইসলামে বিবাহের ক্ষেত্রে নারীর অধিকার সংক্ষেপে বর্ণনা কর।
অথবা, ইসলাম ধর্মে বিবাহের ক্ষেত্রে নারীর অধিকার সম্পর্কে কী বলা হয়েছে?
অথবা, ইসলাম অনুসারে বিবাহের ক্ষেত্রে নারীর অধিকার সম্পর্কে যা জান লিখ।
উত্তর৷ ভূমিকা : মুসলমানদের বিবাহ বিয়ে সংক্রান্ত বিষয়ে ইসলামে বলা হয়েছে যে, বিবাহ একটি সামাজিক চুক্তি। এটা ধর্মাচারের কোন অঙ্গ নয়। যে কোন চুক্তিকে বৈধ করতে হলে কিছু শর্ত পালন করতে হয়। এসব শর্ত আইন দ্বারা নির্ধারিত ও নিয়ন্ত্রিত হয়। সুতরাং ইসলামে বিয়ে বলতে বুঝায় আইনসিদ্ধ শর্তের মাধ্যমে পুরুষ ও মহিলার বৈধভাবে জৈবিক চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে সামাজিক দাম্পত্য জীবনযাপন চুক্তি।
ইসলাম ধর্মে বিবাহের ক্ষেত্রে নারীর অধিকার : ইসলামি বিধান অনুসারে বিয়ের জন্য নিম্নলিখিত শর্তাবলির প্রয়োজন রয়েছে :
১. বর ও কনের সম্মতি : বিয়েতে বর ও কনের পূর্ণ সম্মতি অবশ্যই থাকতে হবে। মুসলিম আইন অনুযায়ী সুস্থ মস্তিষ্ক ও প্রাপ্তবয়স্ক কোন ব্যক্তির বিয়ে তার সম্মতি ব্যতীত সম্পন্ন হলে সে বিয়ে বাতিল বলে গণ্য হবে। এখানে ছেলে ও মেয়ে উভয়ের সম্মতির কথা বলা হয়েছে।
২. দেনমোহর নির্ধারণ ও প্রদান : দেনমোহর হলো নারীদের একটা অধিকার। বিয়ের অন্যতম শর্ত হলো দেনমোহর নির্ধারণ ও প্রদান। দেনমোহর অবশ্যই দিতে হবে কিন্তু আমাদের সমাজে তা মানা হয় না।
৩, বিয়ে রেজিস্ট্রেশন : ১৯৭৪ সালে মুসলিম বিবাহ ও তালাক রেজিস্ট্রেশন আইন অনুযায়ী প্রত্যেক বিয়ে অনুমোদিত ম্যারেজ রেজিস্ট্রার দ্বারা নিবন্ধনকৃত হতে হবে। রেজিস্ট্রেশন না করলে বিয়ে অবৈধ হবে না, তবে তা অপরাধ হিসেবে বিবেচ্য।
৪. বর ও কনের বয়স : বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ১৯২৯ অনুযায়ী বিয়েতে বরের বয়স ২১ ও কনের বয়স ১৮ বছর হতে হবে। কোন অভিভাবক নাবালক ছেলে মেয়ের বিয়ে দিলে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হবে। এ আইনে শাস্তি ১ মাস কারাদণ্ড বা এক হাজার টাকা জরিমানা বা উভয়ই হতে পারে।
উপসংহার ; পরিশেষে আমরা বলতে পারি, ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা। ইসলাম বিয়েসহ সকল ক্ষেত্রে যেসব আইনগত অধিকার দিয়েছে তা যদি সঠিকভাবে পালন করা হয় তাহলে নারী-পুরুষ বৈষম্যহীন এক শান্তিময় সমাজ প্রতিষ্ঠা পাবে।