General Knowledge

আদিম সমাজের খাদ্য সংগ্রহ কৌশল আলোচনা কর।

অথবা, আদিম সমাজের খাদ্য সংগ্রহ কৌশল লিখ।
অথবা, আদিম সমাজের খাদ্য সংগ্রহ কৌশল বর্ণনা কর।
উত্তর৷ ভূমিকা :
Life is either a feast or a fast’ এটি ছিল আদিম সমাজের খাদ্য সংগ্রহ কৌশলের মূলমন্ত্র। সমাজ বিকাশের প্রথম পর্যায়ে মানুষ খাদ্য উৎপাদন করতে পারত না। তারা বিভিন্ন বনজঙ্গলে ঘুরে ঘুরে খাদ্য সংগ্রহ করে জীবিকানির্বাহ করত। এজন্য আদিম অর্থনীতিকে খাদ্য সংগ্রহের অর্থনীতি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
খাদ্য অর্জন কৌশল : আদিম সমাজের খাদ্য অর্জন কৌশল ছিল দুই প্রকার। যথা : ক. খাদ্য সংগ্রহ কৌশল এবং খ. খাদ্য উৎপাদন কৌশল ।
এগুলো প্রত্যেকটি আবার তিন ভাগে বিভক্ত। নি েছকের মাধ্যমে বিষয়টি দেখানো হলো :
খাদ্য সংগ্রহ কৌশল : খাদ্য সংগ্রহ কৌশলকে তিনটি পর্যায় থেকে ব্যাখ্যা করা যায়। নিম্নে এ বিষয়ে আলোচনা করা হলো :
১. পশু শিকার : আদিম মানুষেরা পশুপাখি শিকার করে এদের মাংস খেয়ে জীবন নির্বাহ করত। অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসীরা ক্যাঙ্গারু, টিয়েরাডেল প্রভৃতি শিকার করত। ইন্ডিয়ানরা মহিষ শিকারে বেশি উৎসাহী ও অভ্যস্ত ছিল। তারা বছরের বিশেষ কোন ঋতুতে সারা বছরের জন্য মাংস জোগাড় করে রাখত।
২. মৎস্য শিকার : আদিম সমাজে মাছ ধরা খুবই প্রচলিত ছিল। কিন্তু যারা মাছকে টোটেম মনে করত তারা অন্যান্য জলজ প্রাণী যেমন- কাঁকড়া, শামুক, ঝিনুক ইত্যাদি শিকার করত। উত্তর প্রশান্ত মহাসাগর তীরবর্তী এলাকায় মাছের ব্যাপক চাহিদা ছিল । ব্রিটিশ, কলম্বিয়া এবং দক্ষিণ আলাস্কার হায়দা টিলিনগিট ইত্যাদি জনগোষ্ঠী মাছ ধরেই জীবিকানির্বাহ
করে। সমুদ্র তীরের মানুষ শোল ও শামুক সংগ্রহ করত।
৩. ফলমূল সংগ্রহ : আদিম সমাজে গাছপালার প্রাচুর্য ছিল। তাই সে সময়ের লোকজন শাকসব্‌জি, বীজ, ফলমূল, জাম, আম, মটরশুঁটি, বাদাম প্রভৃতি সংগ্রহ করে নিজেদের খাদ্যের যোগান দিত। তবে ফলমূল আহরণ ভৌগোলিক অবস্থানের উপর নির্ভর করত। যেমন— আফ্রিকার গভীর ও ঘন অরণ্যে ফলমূল জন্মাত না, কিন্তু এশিয়ায় প্রচুর ফলমূল পাওয়া যেত। ফলমূল সংগ্রহে কোন বিশেষ যন্ত্রপাতির ব্যবহার হতো কিনা তা জানা যায় না। গাছে চড়ে হাত দিয়েই ফলমূল সংগৃহীত হতো বলে মনে করা হয় ।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে আমাদের কাছে আদিম সমাজে খাদ্য অর্জন কৌশল সুস্পষ্টভাবে প্রতিভাত হয়ে উঠেছে। আদিম সমাজের মানুষ খাদ্য সংগ্রহ করে জীবিকা নির্বাহ করত। আস্তে আস্তে সময়ের গতির সাথে তাল মিলিয়ে মানুষ খাদ্য উৎপাদন করা শুরু করে । খাদ্য উৎপাদনের সাথে সাথে মানুষের জীবনযাত্রায় ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!