প্রশ্নের উত্তর

আইন ও শালিস কেন্দ্রের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সংক্ষেপে আলোচনা কর।

অথবা, আইন ও শালিশ কেন্দ্র সম্পর্কে সংক্ষেপে বর্ণনা কর।
অথবা, আইন ও শালিস কেন্দ্রের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে লিখ।
অথবা, আইন ও শালিস কেন্দ্রের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বর্ণনা কর।
অথবা, আইন ও শালিস কেন্দ্রের বিবরণ দাও।
উত্তর৷ ভূমিকা :
অধিকার হরণ এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের কারণে পাকিস্তান রাষ্ট্র ভেঙ্গে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম হয়। কিন্তু বাস্তবতা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, স্বাধীনতার দীর্ঘদিন পরেও এদেশের জনগণের মানবাধিকার সংরক্ষণ করা হয়ে উঠে নি। তাই বাংলাদেশের জনগণের মানবাধিকারের দাবিকে বাস্তবায়ন করতে আইন ও শালিস কেন্দ্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে।
আইন ও শালিস কেন্দ্রের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য : নিম্নে আইন ও শালিস কেন্দ্রের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যসমূহ আলোচনা করা হলো :
১. লিঙ্গ সচেতনতা ও সামাজিক ন্যায়বিচার : বাংলাদেশের সমাজ জীবন অজ্ঞতা, নিরক্ষরতা, কুসংস্কারের বেড়াজালে আবদ্ধ । ফলে এ দেশের সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে লিঙ্গ বৈষম্য, সামাজিক অবিচার ও মানবধিকার লঙ্ঘন প্রবেশ করে সমাজ জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে। ফলে সমাজের শতকরা ৯০ ভাগ মানুষ তাদের ন্যায্য মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত
হয়ে সামাজিক অবিচারের শিকার হয়। আর এ রকম পরিস্থিতি দূর করার জন্য আইন ও শালিস কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হয়।
২. আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার পরিবেশ সৃষ্টি : স্বাধীনতালাভের দীর্ঘদিন পরও বাস্তব অবস্থা পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, বাংলাদেশে সমাজজীবনে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। ফলে সমাজজীবন থেকে সামাজিক অনাচার, অবিচার ও বৈষম্য দূর করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। ফলে মানবাধিকার লঙ্ঘন এ দেশের সমাজজীবনে নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়ায় । আর আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে আইন ও শালিস কেন্দ্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের চেষ্টা করে । সুতরাং দেখা যাচ্ছে, আইন পরিবেশ গড়ে তোলা আইন ও শালিস কেন্দ্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।
৩. জাতি, বয়স, লিঙ্গ, শ্রেণি, বর্ণ এবং সংখ্যালঘুদের অধিকার প্রতিষ্ঠা : স্বাধীনতালাভের অব্যবহিত পর থেকে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু শ্রেণি, দুর্বল সম্প্রদায় ও গোত্র তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়। তাই দেশের জনগণের মানবাধিকার রক্ষার জন্য জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র বৈষম্য বিলোপ করে সামাজিক কুপ্রথা বিশ্বাস ও জেন্ডার বৈষম্য বিলোপ করে সকলের অধিকার বাস্তবায়ন করে থাকে যা এর একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, আইন ও শালিস কেন্দ্র যদি তার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জনে পুরোপুরি সক্ষম হয়, তাহলে বাংলাদেশের অধিকার বঞ্চিত জনগণের অধিকার পুনরুদ্ধারে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হবে। তাই বলা যায়, আইন ও সলিশ কেন্দ্রের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।

হ্যান্ডনোট থেকে সংগ্রহীত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!