অথবা, জৈন তত্ত্ববিদ্যা কী?
অথবা, অনেকান্তবাদ কী?
অথবা, জৈন তত্ত্ববিদ্যা বলতে কী বুঝ?
উত্তর৷ ভূমিকা :
ভারতীয় দর্শনের ইতিহাসে জৈন দার্শনিকেরা হলেন একটি নাস্তিক ও বস্তুবাদি দার্শনিক সম্প্রদায়। তাঁদের মতে, বস্তুর অসংখ্য গুণ আছে। মানুষ বস্তুর এ অসংখ্য গুণকে একসাথে জানতে পারে না।
বস্তুর অসংখ্য গুণকে স্বীকার করার কারণে দ্রব্য সম্পর্কে জৈনদের মতবাদকে অনেকান্তবাদ বলা হয় যা নিম্নে আলোচনা
করা হলো :
অনেকান্তবাদ : জৈন মতে, মানুষের জ্ঞাত বস্তুর অসংখ্য ধর্ম আছে। এ ধর্মগুলোকে ২ ভাগে ভাগ করা যায়। যথা: ১. ভাবাত্মক ও ২. অভাবাত্মক।
১. ভাবাত্মক (Positive) : যেসব ধর্ম বস্তুতে উপস্থিত থাকে অর্থাৎ যেসব ধর্মের দ্বারা বস্তুটি গঠিত তাদেরকে ভাবাত্মক ধর্ম বলে। যেমন- কোন একটি গুরুর ভাবাত্মক ধর্ম হলো তার আকার, প্রকৃতি, জাতি, ধর্ম, জন্মস্থা ও
সময় ইত্যাদি ।
২. অভাবাত্মক ধর্ম (Negative) : যেসব ধর্মের অনুপস্থিতির জন্য বস্তুটি জগতের অন্যান্য বস্তু হতে ভিন্ন তাদেরকে অভাবাত্মক ধর্ম বলা হয়। যেমন— গুরুটি বৃহদাকার নয়, কালো নয়, সুন্দর নয়, বহুদেশীয় নয় ইত্যাদি। যে কোন বস্তুরই এ উভয় প্রকার ধর্ম অসংখ্য। তবে বস্তুর ভাবাত্মক ধর্ম হতে অভাবাত্মক ধর্মের সংখ্যা অনেক বেশি। কারণ বস্তুর এ অভাবাত্মক ধর্মই বস্তুটিকে জগতের অপরাপর বস্তু হতে আলাদা করে। কালক্রমে বস্তুর মধ্যে নতুন নতুন ধর্মের আবির্ভাব হয়। এ নব আবির্ভূত ধর্মের সংখ্যাও অনেক। কোন একটি বস্তুর সম্যক জ্ঞান লাভ করতে হলে এ বস্তুর সর ভাবাত্মক এবং অভাবাত্মক ধর্মগুলোকে জানতে হবে। তবে কেবল জ্ঞান ছাড়া কোন বস্তুকে সম্যক রূপে জানা সম্ভব নয়। অবশ্য ব্যবহারীক জীবনে বস্তুর আংশিক জ্ঞান লাভ করতে পারলেই চলে। তাই বলে আবার এ কথা বলাও উচিত নয় যে, বস্তু সীমিত ধর্মের অধিকারী এবং সাধারণ মানুষ কোন একটি বস্তুর সম্যকরূপে জানতে পারে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ভারতীয় দর্শনের ইতিহাসে জৈনদের অনেকান্তবাদ মতবাদটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিল।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%9a%e0%a6%a4%e0%a7%81%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%a5-%e0%a6%85%e0%a6%a7%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%af%e0%a6%bc-%e0%a6%9c%e0%a7%88%e0%a6%a8/
admin

By admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!